• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

ক্রেতাদের সমাগমে জমজমাট সৈয়দপুরের ঈদ মার্কেট

  • ''
  • প্রকাশিত ০৩ এপ্রিল ২০২৪

নীলফামারী প্রতিনিধি:

ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের মাকের্টগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। শহরের বিভিন্ন বিপণী বিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। সবার হাতেই শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শপিং ব্যাগ। কারও হাতে পোশাক বা কারও হাতে জুতা স্যান্ডেলের ব্যাগ। এসব দৃশ্য দেখে বুঝা যাচ্ছে ঈদ ঘনিয়ে আসছে। আর ঈদ উৎসবকে ঘিরে মুখরিত হয়ে উঠেছে সৈয়দপুর শহরের সব মার্কেট। ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় বিপনীবিতানগুলোতে এখন মানুষজনের উপচেপড়া ভিড়। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা শহরের শহীদ ডাক্তার জিকরুল হক সড়কের বিভিন্ন বিপনি বিতান, রেলওয়ে মার্কেট, আধুনিক পৌর প্লাজা মার্কেট, ও রেললাইন সংলগ্ন মার্কেটের দোকানগুলোতে কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। রমজানের প্রথম থেকে বাজারগুলোতে কেনাকাটা শুরু হলেও দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ক্রেতাদের ভিড় দিগুণ।

রামিসা নামের দোকানি বলেন, সকাল ৯টায় দোকান খোলার পর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতি কম। বেলা ১২টার পর ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ছে। আবার সন্ধ্যার পর বেচাকেনা হচ্ছে দিগুণ।

যারা দর্জি বাড়ির তৈরি পোশাক পরতে পছন্দ করেন, তারা এখন ভিড় করছেন থান কাপড়ের দোকানে। পুরুষ-মহিলারা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন পছন্দের দেশি বিদেশি থান কাপড় কিনতে। এছাড়াও সব শ্রেণির ক্রেতারা পছন্দের তৈরি পোশাক কিনতে ঢু মারছেন এ মার্কেট থেকে ও মার্কেটের গার্মেন্টস দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের আগমনে বিক্রি বাট্টা এখন তুঙ্গে। কারণ চাকরিজীবীদের বেতন বোনাস হওয়ায় এবং ব্যবসায়ীদের হাতে অর্থ থাকায় ঈদবাজার ভালোই জমেছে। কয়েকদিন আগে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতাদের তেমন দেখা না গেলেও এখন তারা দল বেঁধে মার্কেটে আসছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। তাদের আগমন চোখে পড়ার মত। ঈদ বাজারের মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দোকানীরাও নিত্যনতুন তৈরি পোশাক ও কাপড় তুলেছেন দোকানে। মার্কেটগুলোতে ব্যস্ততা এখন তৈরি পোশাক ও বাহারি কাপড় ঘিরে। ক্রেতারা বাছাই করছেন তাদের পাঞ্জাবী, প্যান্ট, সার্ট, থ্রি পিসসহ বিভিন্ন ডিজাইনের বাচ্চাদের তৈরি পোশাক। ঈদের কেনাকাটায় বাহারি কাপড় আর হাল ফ্যাশনের গার্মেন্টস পোশাকের জন্য সুপার মার্কেট ও নিউ ক্লথ মার্কেটের আলাদা কদর রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। ক্রেতারা প্রথমে ছুটে আসেন এসব মার্কেটে পছন্দের পোশাক খুঁজতে। দোকানীরা ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে মজুদ করেন দেশীয় উন্নতমানের থান কাপড়, তৈরি পোশাকসহ, ভারতীয় ও পাকিস্তানের বর্ণীল পোশাক।

এবার ঈদের বাজারে এর ব্যতিক্রম হয়নি। সর্বশেষ বের হওয়া নজরকাড়া পোশাক পাওয়া যাচ্ছে মার্কেটগুলোর এসব দোকানে। মার্কেটের সুনাম বজায় রাখতে প্রতিটি দোকানী বিপুল পরিমাণ পোশাক সংগ্রহে রেখেছেন। যাতে কোন ক্রেতা যেন বিমুখ না হন মার্কেট থেকে। সরেজমিনে শহরের ওইসব মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, সব দোকানেই ক্রেতাদের আনাগোনা। এসব মার্কেটে মহিলা, তরুণী ও পরিবারের সন্তানদের নিয়ে আসা অভিভাবকদের দেখা যায় দরদাম করতে। দাম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার সবধরনের কাপড়সহ তৈরি পোশাকের দাম বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত।দোকানীদের অভিমত কাপড়ের দাম সামান্য বাড়লেও বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।

সুপার মার্কেটের, সাজু ক্লথ স্টোরের মো. সাজু বলেন , বেচা বিক্রি জমে উঠেছে, তার দোকানে দেশী বিদেশী ফ্যাশন ও ব্র্যান্ডের শাড়ি কাপড়সহ সবধরনের পোশাকের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া হাল ফ্যাশনের সব ধরণের শাড়ী, থ্রিপিস, শার্ট ও প্যান্ট পিসসহ দেশী বিদেশী পণ্যের সমারোহ ঘটানো হয়েছে তার দোকানে। 

শহরের নিউ ক্লথ মার্কেটের অভিজাত দোকান থ্যাংকস ক্লথ স্টোর-২ এর মালিক একরামুল হক জানান, দোকানে হাল ফ্যাশনের সব পোশাক রাখা হয়েছে। তার দোকানের সংগ্রহে রয়েছে দেশী, বিদেশী ও পাক-ভারত অঞ্চলে এখন যা চলছে এমন ফ্যাশনের পোশাক। এবারও বিভিন্ন ব্রান্ডের পাঞ্জাবী ও গেঞ্জি সেটের ক্রেজ চলছে। এছাড়াও ঈদের আগ পর্যন্ত যখন যে ফ্যাশন বের হবে তা তার দোকানে পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

বস টেইলসের পরিচালক মো. লাড্ডু জানান, রমজানের শুরুতে অর্ডার নেওয়া হালকা থাকলেও এবার সে অবস্থা আর নেই। সেলাইয়ের প্রচুর অর্ডার এসেছে। ২/৪ দিন পরে তিনি আর অর্ডার নিবেন না জানিয়ে তিনি বলেন ছেলেদের পোশাক তৈরির অর্ডারই পাওয়া যাচ্ছে বেশী। প্যান্টের অর্ডার ভালো মিলছে। এখন সেলাইয়ে ব্যস্ত কারিগররা। নারীদের পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠান সৌখিন টেইলার্সের কারিগররা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পযৃন্ত চলছে সেলাই মেশিনের চাকা। প্রতিষ্ঠানের মালিক পারভেজ জানান, বর্তমানে তাদের দম ফেলবার ফুরসত নেই।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বলেন, নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads